ক্যারিয়ার ডেস্ক
নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে চাকরিপ্রত্যাশীর প্রথম পরিচয় সিভির মাধ্যমে। কারণ চাকরিদাতা প্রার্থীদের সরাসরি চেনে না। সিভির মাধ্যমে তাদের প্রথম পরিচিত পান। তাই যার সিভি যতো ভালো হয় চাকরিদাতাদের কাছে তার গুরুত্ব ততো বেশি। আর সিভি আকর্ষণীয় করে লেখাও এক ধরনের যোগ্যতা।
তাই বলে সিভি আকর্ষণীয় করতে গিয়ে বিশদ বর্ণনা দেওয়া ঠিক নয়। কারণ মানবসম্পদ (এইচআর) বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়োগকারী ব্যক্তিরা একটি সিভি দেখতে গড়ে ১-২ মিনিটের বেশি সময় নেন না। তাই কম বাক্যে সিভি আকর্ষণীয় করে তোলাই শ্রেয়।
একটি সিভির গুরুত্বপূর্ণ সেকশনের মধ্যে হলো-কনটাক্ট ইনফরমেশন, পারসোনাল স্টেটমেন্ট, কাজ/প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং স্কিলস সেকশন।
অনেকে সিভির শুরুতে ‘কারিকুলাম ভিটা’ বা ‘সিভি’ দিয়ে লেখা শুরু করেন। কিন্তু এটি ঠিক নয়। নিজের নাম শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। যোগাযোগের ঠিকানা, ই-মেইল ও মোবাইল নম্বর অবশ্যই দিতে হবে। এছাড়া লিংকডইন প্রোফাইলও দিতে পারেন।
ফন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে টাইমস নিউ রোমান, অ্যারিয়্যাল বা ভারদানা ফন্ট ব্যবহার করতে পারেন। ফন্ট সাইজ ১১–এর কম হওয়া যাবে না। মাঝেমধ্যে বোল্ড এবং হেডার অপশনও ব্যবহার করুন। তবে অবশ্যই কালো রঙ ব্যবহার করতে হবে।
সিভিতে যেসব অভিজ্ঞতা সিভিতে তুলে ধরবেন, সেগুলো আবেদন করা চাকরির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক কি না, তা নিশ্চিত হতে হবে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কাজের বিবরণ দেখুন এবং মিলিয়ে নিন সেগুলো আপনার অভিজ্ঞতার সঙ্গে কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ। এরপর নিশ্চিত হয়ে সিভি পাঠিয়ে দিন।
অনেকে পরিশ্রমী, মনোযোগী, উৎসাহী-এ ধরনের বিশেষণগুলো ব্যবহার করেন যা ঠিক নয়। গতানুগতিক নিয়মে দুই পৃষ্ঠায় সিভি শেষ করতে বলা হয়। আপনি কোন ধরনের চাকরিতে আবেদন করছেন, তার ওপর পৃষ্ঠা বাড়তেও পারে। তবে দুই পৃষ্ঠার সিভি দেখলে নিয়োগকর্তারা সাধারণত খুশি হন।
সিভিতে পাসপোর্ট সাইজের ছবি সংযুক্ত করতে হবে। ফরমাল সিভি দিতে হবে। ফেসবুক থেকে ছবি নামিয়ে দেওয়া যাবে না। আপনার কর্মজীবনের লক্ষ্য এবং আপনি প্রতিষ্ঠানকে কী দিতে পারবেন, তা কয়েক লাইনে লিখতে হবে। তবে ২-৩ লাইনের বেশি বাক্য লেখা যাবে না। আবেগি কথাবার্তাও লেখা যাবে না।
যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতক পাস করেছেন তারা সিভিতে অভিজ্ঞতা লেখার জায়গায় বিভিন্ন কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ নেওয়ার তথ্য যোগ করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণের তথ্যও এখানে প্রাসঙ্গিক। অভিজ্ঞতা একদম ফাঁকা রাখার চেয়ে এসব প্রশিক্ষণের তথ্য অন্তর্ভূক্ত করা শ্রেয়।
যে কোনো চাকরির জন্য এখন কম্পিউটার জ্ঞান থাকা প্রায় বাধ্যতামূলক। তাই সিভিতে অবশ্যই কম্পিউটার দক্ষতা উল্লেখ করতে হবে। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ার পয়েন্ট জানার তথ্য দিতে হবে। ফটোশপ বা ভিডিও এডিটিং জানা থাকলে সেগুলোর তথ্যও দিতে পারেন। কোথায় শিখেছেন, কতো সালে শিখেছেন এসব তথ্য।
সিভিতে রেফারেন্স দিতে গিয়ে অনেকে দ্বিধায় ভোগেন। কার নাম দেবেন? পেশার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক কিনা। আপনার পরিচিত যে কোনো পেশার মানুষের রেফারেন্স সিভিতে দিতে পারবেন। তবে অবশ্যই অনুমিত নিয়ে রেফারেন্সে নাম দিতে হবে। তার নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল ও তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করতে হবে। যারা নবীন স্নাতক তারা তাদের শিক্ষকদের নাম রেফারেন্সে দিতে পারেন।